৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়

৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। অনেকে ছোট চুল দ্রুত বড় করতে চাই, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি। চুল ঘন করা বা চুল লম্বা করা একটি সময় সাপেক্ষ বিষয় চুল লম্বা করার সঠিক উপায় হচ্ছে নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা, সুষম খাদ্য গ্রহ, দৈনন্দিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো, পরিমিত পরিমান পানি পান করা। আজকাল অনেকে চুলে নানা রকম ট্রিটমেন্ট করান। তবে এইসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কেমিক্যাল, যা আদতে চুলের জন্য ভালো নয়। আর এই সব ট্রিটমেন্টের প্রভাব সাময়িক। শুধু তাই নয় স্কিন কেয়ারের পিছনে আমরা যতটা সময় নষ্ট করি কিন্তু হেয়ার কেয়ার এর পিছনে খরচ করা হয় না, যত্ন না নিলে কোন কিছু সুন্দর হয় না।

প্রয়োজনে চুলের যত্ন নিতে সারা সপ্তাহের জন্য একটা রুটিন বানিয়ে নিন। আর এই রুটিন মেনে চললে তবে চুল গজাবে। অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত কোন হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা চলবে না। স্কাল্প পরিষ্কার রাখতে সপ্তাহে তিন দিন করে শ্যাম্পু করতে হবে, এক্ষেত্রে মাইল্ড ব্যবহার করতে পারলে সবচাইতে ভালো। শ্যাম্পু করার সময় সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন, আর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করতেও কিন্তু ভুলবেন না। রোদ দূষণের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে কন্ডিশনার, এছাড়াও চুলকে নরম রাখে আর এই কন্ডিশনার চুলকে একটা সুরক্ষা ভলিউম দিয়ে থাকে।

পেজ সূচিপত্রঃ ৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়

চুলের যত্নে নিয়মিত তেল মালিশ 

৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। নিয়মিত তেল মালিশ চুলের বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। বিভিন্ন ভেষজ তেল চুলে পুষ্টি যোগায় ও চুলের বৃদ্ধি বাড়াই। রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি জানান, বিভিন্ন ধরনের তেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করা যায়। এজন্য এক চা চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল এক চা চামচ কাঠ বাদাম তেল এক চা চামচ জলপাই তেল হালকা গরম করে নিন সঙ্গে মিশন অর্ধেক চা চামচ  ক্যাস্টর অয়েল। চুলে লাগান এরপর আধা ঘন্টা রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে একদিন পর পর চুলে তেল মালিশ করতে পারে।

চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার
৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। চুলের যত্নে আমলকির ভূমিকা অনবদ্য। আধা কাপ আমলকি গুড়োর মধ্যে এক চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে মিশে নিন ডিমের সাদা অংশ, তারপর চুলে মেঘে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।

চুলের যত্নে কাঠবাদাম তেল 
৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারলে ভালো। তবে দোকানেও কাঠবাদাম তেল পাওয়া যায়, তবে সরাসরি এই তেল তুলে না মেখে গরম করে ব্যবহার করুন। এক ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু করে নিন সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে চুল লম্বা হবে।

চুলের যত্নে ডিমের ব্যবহার 
৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি চুল লম্বা করতেও ডিম সত্যি  উপকারী। আধা কাপ মতো ডিমের সাদা অংশ চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এখন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন চুল ভালোভাবে শুকানোর পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন পরে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু করার পরে অবশ্যই কন্ডিশন করতে ভুলবেন না।

চুলের যত্নে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না


৭ দিনে চুল লম্বা করার সহজ উপায়। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন যে চুলের ঢাকা দিনের পর দিন পাতলা হতে থাকে। কারণ আপনার চুলের গড়া যেভাবে পুষ্টি পায় আপনার চুলের ডগা পর্যন্ত একইভাবে পুষ্টি পৌঁছায় না। আর ঠিক এই কারণে চুলের ঢাকা ধীরে ধীরে পাতলা ও সরু হতে থাকে। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পরে অবশ্যই কন্ডিশনাল লাগিয়ে নিন, এটি আপনার চুলের উপর একটি সুরক্ষার স্তর যোগ করে। চুলের স্বাস্থ্য হয় দেখার মত চুল খুব তাড়াতাড়ি লম্বা হয়।

দ্রুত চুল লম্বা করতে কিছু টিপস জেনে নিন

  • এক চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ দারুচিনি গোড়া মেশান। চুলের গোড়ায় মাসাজ করুন এই মিশ্রণ দিয়ে, এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন এই হেয়ার প্যাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্কাল্পে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করবে। ফলে চুল অতি দ্রুত বাড়বে।

  • একটি পাত্রে ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ফেটিয়ে নিন ভালো করে। আরেকটি পাত্রে অর্ধেকটা পাকা কলা নিয়ে চটকে নিন। ডিমের সাদা অংশ পাকা কলার পেস্ট ও এক চামচ কমলার রস একসঙ্গে মেশান, মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও এক চামচ দুধ মেশান। চুলের ধরন অতিরিক্ত শুষ্ক হলে আরো খানিকটা কলা মেশান, মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুলের জট ছাড়িয়ে নিন। কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন চুল, ব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি লাগান চুলে। চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে লাগাবেন। হেয়ার প্যাক লাগানো শেষ হলে চুল উঁচু করে বেঁধে শাওয়ার ক্যাপ পোরুন। এক ঘন্টা পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • একটি পাত্রে এক চা চামচ নারিকেল তেল নিন। এতে লেবুর রস আধা কাপ দই এবং একটি আস্ত ডিম মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মসৃণ হলে আঙ্গুলের সাহায্যে চুলের গোড়ায় লাগান। তোয়ালে গরম পানিতে ডুবিয়ে চুল জড়িয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এরপর হালকা গরম পানিতে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলন।
  • চুলের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য চুলের গোড়া  ম্যাসাজ করুন নিয়মিত। রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে চুল আঁচড়ে ম্যাসাজ করুন .১০ থেকে ১৫ মিনিট। চুল গুলো উল্টো করে ঘাড়ের কাছ থেকে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ শুরু করুন। 
  • হেয়ার ড্রায়ার, রোলার, স্টেটনার, এগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। যন্ত্রপাতি নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল ফেটে যায় ফলে বাধাগ্রস্থ হয় স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে। গরম পানি দিয়ে চুল ধরবেন না সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন চুল ধোয়ার জন্য।
  • চুলের গ্রোথ বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজ থেঁতো করে রস বের করে নিন, চুলের গোড়ায় এই রস মাসাজ করুন, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই চুল ধোয়ার পরে কন্ডিশনার করতে ভুলবেন না। 

রুক্ষ শুষ্ক চুলের জেল্লা ফেরাতে তিনটি টিপস

ঠিক যেভাবে ঋতু পরিবর্তন হয়, যেভাবে গাছের পাতা রং বদলায় ঝরে পড়ে একইভাবে চুলেও দেখা দেয় নানা বদল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চুল পাতলা হতে থাকে, পাশাপাশি হারিয়ে যায় জেল্লা। দূষণ ও পরিচর্যার অভাবেই চুলের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। যতদিন যাই আরো সরু দেখায় চুলের বিনুনি, এই সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে শ্যাম্পু তেলেই যথেষ্ট নয়। আপনাকে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্য নিতে হবে, চুলকে ঘন ও উজ্জ্বল করে তুলতে প্রাকৃতিক উপাদানের গুরুত্ব অপরিহার্য। কোন কোন উপাদান মাথায় মাখলে চুলের দশা ফিরবে জেনে নিন।

অ্যালোভেরা জেল
হাইডেটিং উপাদানের জন্য অ্যালোভেরার জয় জয়কার। এই প্রাকিতিক উপাদানের মধ্যে এমন অনেক এনজাইম রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে এবং চুলের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত চলে এলোভেরা জেল মাখলে চুল অনেক বেশি ঘন দেখায়, অর্থাৎ চুলের ভলিউম বৃদ্ধি করে। শুধু চুলে এলোভেরা জেল মেখে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বসে থাকুন তারপর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

নারিকেল তেল
চলে যত্নে নারিকেল তেলের কোন বিকল্প নেই। নিয়মিত যদি মাথায় নারিকেল তেল মালিশ করেন চুলের অধিকাংশ সমস্যায় দূর হয়ে যাবে। নতুন চুল গজানো থেকে শুরু করে, চুলের ক্ষয় পুনরুদ্ধারে দুর্দান্ত কাজ করে এই নারিকেল তেল। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা গরম নারীকেল তেল চুলে মাখুন পর দিন সকালে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই টিপস  কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।

ডিমের কুসুম
ডিমের হলুদ অংশ না খেলেও ক্ষতি নেই। এই কুসুম মাথায় মেখে নিন, ডিমের মধ্যে উচ্চ পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে, যা চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে একদিন মাথায় ডিমের হলুদ অংশ মাখলেই উপকার পাবেন। গোসলের আগে ডিমের কুসুম চুলে ও স্কেলপে লাগিয়ে নিন, ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন, ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন শ্যাম্পু করার সময়। 

চুল সুন্দর রাখার উপায়

চুল সুন্দরের এক বিশেষ প্রতীক। সুন্দর চুল যেকোন মানুষকে সহজেই করে তুলতে পারে আকর্ষণীয়, চুলের স্টাইল পাল্টালে যে চেহারা পাল্টে যায় সেটা কি আপনি জানেন? নারীর চুল নিয়ে কত কবিতা লেখা রয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। তাই নিজেকে সুন্দর আকর্ষণীয় করে তুলতে চুলের সেই নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতি যত্নশীল হইয়ে।

১  চুল সব সময় জটমুক্ত রাখুন জটযুক্ত চুল আঁচড়ালে ছিঁড়ে যায় এবং মাথার চামড়ায় টান পড়ে যা 
চুলের জন্য ক্ষতিকর।

২  দিনে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বার মাথা আঁচড়াবেন। আঁচড়ানোর সময় লক্ষ্য রাখবেন শুধু চুলে নয় চিরুনি যেন আপনার মাথার চামড়াকে স্পর্শ করে, বারবার এভাবে আঁচড়ালে মাথায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা চুলের পুষ্টির জন্য ভালো।

৩  চুলের প্রতি যত্ন নিতে হলে নজর দিতে হবে আপনার চিরুনির দিকেও। অনেকেই কম দামি মাথাভাঙ্গা চিরুনি ব্যবহার করেন, যা চুলের ভীষণ ক্ষতি করে। লক্ষ্য রাখবেন আপনার চিরুনির প্রতিটি দাঁতের মাথা যেন সমান এবং মসৃণ হয়। কাঁচা দুধে চিরুনি ভিজিয়ে রেখে সে চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ালে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। 

৪  চুল কয়েক প্রকার হতে পারে। রুক্ষ,  তৈলাক্ত, এবং স্বাভাবিক। আপনার চুলটি কেমন তা জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী ভালো কোন কোম্পানির শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। আজেবাজে শ্যাম্পু চুলের ক্ষতি করে।  কখনোই এক শ্যাম্পুতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন না। শ্যাম্পু কিছুদিন পর পর ব্র্যান্ড বদলিয়ে ব্যবহার করুন।

৫  চুলের পুষ্টির জন্য সপ্তাহে একদিন শ্যাম্পু করার আগে চুল ডিম এবং লেবুর রসের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাথায় ভাল করে ঘষে এ মাস্ক লাগিয়ে এক ঘন্টা পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন চুল উজ্জ্বল হবে।

৬  খুশকি চুলের প্রধান শত্রু।খুশকি দূর করতে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন। খুশকি  নাশক ভালো শ্যাম্পু এর জন্য কার্যকরী। খুশকি এবং উকুন কোনটাকেই প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। খুশকির আধিক্য হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। 

৭  বেশি করে তেল দিয়ে রাখলেই যে চুল ভালো থাকবে এমন কোন কথা নেই। তেল ব্যবহার করতে হলে তেলটাকে একটু গরম করে নিয়ে মাথার চামড়ায় ঘষে ঘষে লাগাবেন। সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার না করাই ভাল।

৮  চুল ভালো রাখার জন্য সপ্তাহে একদিন মেহেদী ব্যবহার করতে পারেন। মেহেদী মাথা ঠান্ডা রাখে এবং চুল ঘন উজ্জ্বল করে।

 ৯  রাতের বেলায় কখনোই খুব টাইট করে চুল বেঁধে শোবেন না। হালকা একটা বেনি বা এমনভাবে বাঁধুন  যাতে মাথার চামড়ায় টান না খাই।

১০  সব সময় চুল পরিষ্কার রাখতে চেষ্টা করুন। যারা নিয়মিত বাইরে বের হন তারা প্রতিদিন না হলেও একদিন পরপর মাথা ধোয়ার চেষ্টা করুন। পাকা চুলে রং করা হয় সাধারণত সাদা চুল ঢাকার জন্য। তার ওপরে কেউ যদি হাইলাইটিং অথবা ট্রিকিং করতে চান তাহলে সেটা সম্ভব নয়। কারণ রংয়ের ওপর আবার রং করা যায় না। পাকা চুল রং করার আগে রূপ  বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিন।
চুলে রং করলে যে চুল খুব ক্ষতি হয় তা নয়। তবে চুলে কেমিক্যাল ব্যবহারের পর চুলের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। চুলের রং করার পর সপ্তাহে অবশ্যই দুইবার তেল দেয়া দরক। এবং নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। চুল শ্যাম্পু করার আগে সপ্তাহে একদিন দই ও ডিম মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে ঘন্টা খানেক পর ধুয়ে ফেললে উপকার পাবেন। দিনে বারো গ্লাস পানি অবশ্যই খেতে হবে এর সঙ্গে মাছ, মাংস, শাক-সবজি ও ফলমূল খাওয়া দরকার। 

চুলের যত্ন জেনে রাখা জরুরী 

চুল সুন্দর করার জন্য আমরা অনেক ধরনের ব্যবস্থা নেই। চুলে তেল দেওয়া, শ্যাম্পু করা, ইত্যাদি। এগুলোর আগে আমাদের কতগুলো জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। যেমন চুলে কোন ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত, কোন ধরনের চিরুনি, তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে, কিভাবে চুল আঁচড়াতে হবে ইত্যাদী। চুলের যত্নের জন্য কতগুলো দরকার টিপস জেনে নিন ঃ

১  আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। বাজারে তৈলাক্ত, শুষ্ক, স্বাভাবিক চুলের জন্য আলাদা শ্যাম্পু পাওয়া যায়। আপনার ধরনটি বেছে নিন।

২  কন্ডিশনার যুক্ত শ্যাম্পু কিনুন যারা আলাদাভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে চান না। ভালো গুণসম্পন্ন ভেষজ তেল বা নারিকেল তেল ব্যবহার করুন। চুল আঁচড়ানোর জন্য দুটি ব্রাশ ও দুটি বড় দাঁতের চিরুনি রাখবেন। 

৩  দুটি তোয়ালে রাখবেন। একটি গোসলের সময় ব্যবহারের জন্য আরেকটি গোসলের পর ভেজা চুল বেঁধে রাখার জন্য।

৪  দুটি চিরুনীর মধ্যে একটি দাঁতের মুখ যেন ভোতা হয়।

৫  নাইলনের ব্রাশ ব্যবহার করবেন না

৬  অর্থ বৃত্তাকার ব্রাশ শুষ্ক চুলের জন্য ভালো। 

৭  ফ্লাট ব্রাশ তৈলাক্ত ও কমিশন  চুলের জন্য ভালো। 

৮  গোল ব্রাশ সাধারণ চুলের জন্য ভালো। 

৯  যাদের চুল খুব ঘন তাদের পক্ষে অর্ধেক লাইলন অর্ধেক স্বাভাবিক দাঁতের ব্রাশ ভালো।

১০  যাদের চুল পাতলা তারা স্বাভাবিক দাঁতের ব্রাশ ব্যবহার করবেন।

১১  বাস, চিরুনি, তোয়ালে এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করবেন।

১২  অল্প গরম পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে সব চিরুনি ভিজিয়ে দিন। বেশ খানিকক্ষণ ভেজানোর পর পুরনো       টুথব্রাশ দিয়ে চিরুনি গুলি পরিষ্কার করুন।

১৩  ট্যাপের নিচে পানিতে চিরুনি গুলি এবার পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।

১৪  গরম পানিতে সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে তোয়ালে ভেজাবেন। ধোয়ার সময় খেয়াল রাখবেন এতে যেন সাবান লেগে না থাকে। এটা আপনার চুলের ক্ষতি করবে, মাঝে মাঝে  অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে তোয়ালে ধোবেন।

১৫  চুল ব্রাশ করার সঠিক পদ্ধতি মেনে চলুন। মাথা সামনে ঝোকান ঘাড়ের কাছ থেকে চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে পুরো চুলটা কপালের কাছে নিয়ে আসুন। এতে কপাল থেকে চুল সরে গিয়ে কপাল বড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

১৬  আগে চুলের ঝট হাত দিয়ে ছাড়িয়ে নেবেন। তারপরে চলে চিরুনি বা ব্রাশ চালান এতে চুল ছিড়বে না এবং চুলে টান পড়বে কম।

১৭  বারবার ব্রাশ করলে চুলের স্বাভাবিক তেল চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটি চুলের জন্য দরকার।

১৮  চুল ধোয়ার পর পরই চুল আঁচড়াবেন না। এতে চুল ছেড়ে বেশি
চুল ধোয়ার পর পরে গামছা বা তোয়ালে দিয়ে ঘষে ঘষে মুছবেন না।

১৯  চুল ধুয়ে চুলে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তারপর খানিকক্ষণ চুল খোলা রেখে আধা শুকনো হলে আজকে আস্তে আস্তে আঁচড়ে নিন।

২০  চুল সব সময় মাথা সামনের দিকে ঝুকিয়ে ধোবেন। এতে চুলে চাপ পড়বে কম, কপাল থেকে চুল সরে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না।

২১  চলে এমন ভাবে তোয়ালে জড়াবেন না যাতে চুলে টান পড়ে। পাতলা অথচ পানি শুষে নেয় এরকম তোয়ালে ব্যবহার করবেন।

২৩  চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার যদি ব্যবহার করতে চান তবে চুল থেকে একটু দূরে রেখে এটা চালাবেন এবং অবশ্যই হাওয়ায় বা কম তাপে চুল শুকাবেন।

২৪  বেশি হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো। রোদে চুল শুকাবেন না। 

২৫ ভেজা চুল বাঁধবেন না। সব সময় চুল ও মাথার স্কাল পরিষ্কার রাখবেন, ভেজা চুল বেঁধে রাখলে চুলে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল উঠে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
 

শীতে চুলের যত্ন

শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য চুল রুক্ষ ম্যাড়মেড়ে হয়ে ওঠে। তারপর সূর্যের কিরণ চুলকে করে দেয় আরো বেশি শুষ্ক। এর সঙ্গে দেখা দেয় চুলের হাজারো সমস্যা, যেমন খুশকি, চুলপড়া, চুলে শুষ্কতা ও রুক্ষতা, চুল ফেটে যাওয়া ইত্যাদি। চুলের শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করার জন্য চাই নিয়মিত যত্ন। যেমন ঠান্ডার জন্য অনেকেই এই সময় শ্যাম্পু করতে চান না, অথচ এই অপরিষ্কার স্কাল্প থেকেই  চুল পড়া ও চুলের অন্যান্য সমস্যা শুরু হয়। নিয়মিত চুলের যত্ন নিলেই কিন্তু চুলের মসৃণতা ও জৌলুস বজায় থাকে।সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন অলিভ অয়েলের মধ্যে ১০-১২টা কেশুত পাতা দিয়ে গরম করে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে মাথার তালুতে মাসাজ করুন মিনিট কুড়ি। এরপর গরম পানিতে ভেজা তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখুন মিনিট দশেক। এরপর ১টি ডিম ২ চামচ মধু জলপায়ের ক্বাথ, আমলকির রস অলিভ অয়েল, জবা ফুলের রস ও ভৃঙ্গরাজ পাতার রস একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন মিনিট ৪০। চুল ধুয়ে ফেলুন, ক্যাস্টর অয়েল ল্যাভেন্ডার অয়েল ও নারিকেল তেল সমপরিমাণে মিশিয়ে নিয়ে চুলের গোড়ায় হালকা করে মাসাজ করে লাগান, দু ঘন্টা পর হালকা কোনো ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এক কাপ দুধে একটি ডিম ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি তুলে লাগান পাঁচ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এক কাপ নারিকেলের দুধ দু চা চামচ ময়দা তিন চামচ ক্যাস্টর অয়েল ১ চামচ শিকাকাই ও আমলকির পাউডার, এক চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় মেসেজ করুন মিনিট বিশ। 
এরপর রিঠো ভেজানো পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।একটা পাকা কলা ও খানিকটা পাকা পেপে চটকে নিতে নিয়ে তাতে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। একটা ফ্যাটানো ডিমের সঙ্গে এক চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ গ্লিসারিন, এক চামচ ভিনিগার, দু চামচ পাতিলেবুর রস এবং কম চামচ শ্যাম্পু মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন।  আধা ঘন্টা পর চুল ধুয়ে ফেলুন এটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে তিন বার। হেনার সঙ্গে নারকেল তেল এবং গরম দুধ মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। মিনিট চল্লিশ পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুলতানি মাটি ভিজিয়ে রাখুন এতে দু চামচ গরম নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন এটি চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান। মিনিট ৪০ পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। খুশকি এক ধরনের স্কাল্প ইনফেকশন। এর থেকে দ্রুত মুক্তি না পেলে ত্বকেও এর প্রভাব পড়তে পারে। দরকার হলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পুর  সময় আপনার হেয়ার ব্রাশ ডেটল পানিতে ধুয়ে ফেলুন। 

শেষ কথা

৭ দিনে চল লম্বা করার সহজ উপায় সম্পর্কে আমি যেই তথ্যগুলো দিয়েছি।এতে সাত দিনে চুল লম্বা হবে না, চুল লম্বা করতে হলে এটি অনেক সময় সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু আমার কন্টেন্টের মধ্যে আমি যেগুলো পদ্ধতি বর্ণনা করেছি, এগুলো আপনি ব্যবহার করলে আপনার চুল হেলদি হবে, মসৃণ হবে, এবং সুন্দর হবে, তাই আমার কনটেন্টের মধ্যে আপনার যে বিষয়গুলো ভালো লেগেছে কমেন্টের মাধ্যমে তা জানাবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রায়হান ২৪ র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url